বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে এবং তা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই নির্বাচন হবে।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১ম পুনর্মিলনী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হলের খেলার মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব ইকবাল মাহমুদ বাবলু। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, পুনর্মিলনীর আহ্বায়ক আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাউছার। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে সংবিধান অনুযায়ী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমেরিকা, ভারতসহ পৃথিবীর অন্যান্য বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেভাবে ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচন হয়েছে বাংলাদেশেও একইভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচন হবে অত্যন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। তিনি বলেন, সেই নির্বাচনে আপনারা তাদের বর্জন করবেন, ঘৃণা করবেন যারা রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছিল। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে হাতকড়া পরিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আজ জাতির পিতা নেই। কিন্তু তার কন্যা শেখ হাসিনা আছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এক সময় যারা এ দেশকে দারিদ্রতার রোল মডেল বলেছে এখন তারা দেখছে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ডাকসুর সাবেক এ ভিপি বলেন, আমারা যখন ছাত্র রাজনীতি করতাম, তখন আমাদের কাছে আদর্শ ছিলো। শিক্ষকরাও আমাদের অত্যন্ত স্নেহ করতেন। ব্যক্তি জীবনে আমরা কে কোন সংগঠন করতাম তা মুখ্য ছিল না। আমরা একে অন্যকে শ্রদ্ধা করতাম, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
এ সময় তিনি ইকবাল হল (বর্তমান জহুরুল হক হল) নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। বর্ণনা করেন ৬৯’র উত্তাল দিনগুলোর কথা। লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে কীভাবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে তা তুলে ধরেন তোফায়েল বলেন, আমরা ইকবাল হলে বসেই ৬৯’র গণ অভ্যুত্থানের কর্মসূচি ঠিক করি। সব আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইকবাল হল। মানুষ তার দাবিসহ সব কিছু নিয়ে ইকবাল হলে আসতো। আমরা তখন সেগুলো সমাধানের পন্থা বের করতাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইকবাল হল। সারাদেশের আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে ইকবাল হল তিনি বলেন, আমরা যখন ছাত্র আন্দোলন করতাম তখন কখনো গভর্নর, আইজিপির কাছে যাইনি। তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এই ইকবাল হলে এসেছেন।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমি আর নাহিদ ভাই ছাত্র ইউনিয়ন করতাম। আর তোফায়েল ভাই করতেন ছাত্রলীগ। কিন্তু আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল অনেক গভীর ও বন্ধুত্বপূর্ণ। আমি যত সময় ইকবাল হলে কাটিয়েছি তা ছিল আমার জীবনের উজ্জ্বলতম সময়। এ হলে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে।
উৎসব উদ্বোধনকালে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ইতিহাসের সঙ্গে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল জড়িত। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মে এই হলের ছাত্রদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিলো।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা আগামীতে ডাকসু নির্বাচন করবো। এ জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা চাই।
সভাপতির বক্তব্যে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা হলের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।