নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জের বন্দরে অপহরণের ছয়দিন পর এলেম নামের সাত বছরের এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার নবীগঞ্জ বাগবাড়ি এলাকায় ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ হত্যাকান্ডের মূল হোতা নিহত এলেমের সৎ বোনের স্বামী বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।
নিহত এলেম নবীগঞ্জ এলাকার লাল মিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। সে একরামপুর এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে।
এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা জানান, আবদুর রাজ্জাকের প্রথম স্ত্রীর সংসারের মেয়ের জামাতা বিল্লাল হোসেন বেশ কিছুদিন আগে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে সে বিভিন্ন সময়ে মাদক সেবনের জন্য তার শ্বশুরের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করে আসছে। গত ৬ মার্চ আবারো মাদক সেবনের জন্য টাকা চাইলে তার শ্বশুর আবদুর রাজ্জাক টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিল্লাল হোসেন দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। ওইদিন দুপুরে এলেম বাসা থেকে নিখোঁজ হলে আবদুর রাজ্জাক বিল্লাল হোসেনকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। পরদিন পুলিশ বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠালে আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বিল্লাল হোসেন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এলেমকে অপহরণ থেকে শুরু করে হত্যা এবং লাশ গুমের কথা স্বীকার করে। এলাকাবাসীও দেখেছে বিল্লাল হোসেন এলেমকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ অভিযুক্ত বিল্লালের বাড়ির পার্শ্ববর্তী ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অপহৃত এলেমের গলিত লাশ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিহত এলেমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার মাথার পেছনে এবং গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অপহরণের দিনই মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে গুম করা হয়েছিল। হত্যাকান্ডের মূল হোতা অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হত্যাকান্ডের বিষয়ে তদন্ত চলছে। ##