হারাধন চন্দ্র দে- আড়াইহাজার প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের মায়ের কুকীর্তি দেখে ফেলায় মা এবং পরকীয়া প্রেমিক মিলে শিশু হৃদয় (৯) ও জিহাদ(৭) কে শ্বাসরোধে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। বড় ছেলে হৃদয় মৃত্যু বরণ করলেও ছোট ছেলে জিহাদকে মূমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সন্তানকে হত্যার অভিযোগে মা শেফালী বেগম(২৫)কে গ্রেফতার করলেও প্রেমিক মোমেন পালিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে,উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের বাড়ৈপাড়া গ্রামের ওমান প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী শেফালী বেগমের সাথে তার বৈমাত্রেয় ভাই মোমেনের দীর্ঘদিন যাবৎ পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল।
প্রতিরাতেই প্রেমিক মোমেন ভাবী শেফালী বেগমের ঘরেই রাত্রি যাপন করত। এ ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার শালিস বসে বিচার আচার হয়।
ঘটনার দিন ১২এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে পরকীয়া প্রেমিক মোমেনের সাথে একই বিছানায় রাত্রি যাপন করে বলে গ্রেফতারকৃত মা শেফালী বেগম পুলিশের কাছে স্বীকার করে। গভীর রাতে শেফালী বেগমের বড় ছেলে হৃদয় মায়ের সাথে মোমেনকে দেখে ফেললে ছেলে হৃদয় ঘটনা তার ওমানে থাকা পিতা ও বাড়ির লোকজনদের বলে দিবে বলে। ঐ সময় মোমেন শেফালী বেগমকে ঘুমের বড়ি খাওয়ালে সে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে আগুনের তাপে ঘুম ভাংলে তাদের খাটে তার দুই পুত্র হৃদয় ও জিহাদকে আগুনে ঝলসানো অবস্থায় দেখতে পান বলে স্বীকার করে মা শেফালী বেগম। তবে তার পুত্র হৃদয়কে প্রেমিক মোমেন হত্যা করেছে বলে সে পুলিশকে জানান।
সকালে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত হৃদয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেছে।
আগুরে ঝলসানো মূমূর্ষ জিহাদ(৭)কে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে রেফার করেন।
নিহত হৃদয়ের দাদা (আনোয়ারের পিতা) বিল্লাল হোসেন জানান,মোমেন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর আগের সংসারের ছেলে। তাদের অবৈধ সম্পর্কের ঘটনায় বার বার শাসন করেও তাদেরকে ফেরানো যায়নি। তিনি জানান,এ ঘটনা শুনে বিগত চার মাস আগে তার ছেলে আনোয়ার ওমান থেকে দেশে ফিরে আসে। সে তার স্ত্রী শেফালী বেগমকে এ পথ থেকে ফেরাতে না পেরে স্ত্রী শেফালী বেমগকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বিদায় করে দেয়। আনোয়ার পুনরায় তিন মাস আগে ওমান চলে গেলে শেফালী বেগম জোর করে তার ঘরে এসে ছেলেদের সাথে থাকতে শুরু করে।
হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত মা শেফালী বেগম ঢাকার কেরানীগঞ্জের ইসলামপুর এলাকার সুন্দর আলীর কন্যা বলে পুলিশ জানায়।
আড়াইহাজার থানার ওসি এম এ হক জানান, ধারনা করা হচ্ছে মায়ের কুকীর্তি দেখে ফেলায় মা এবং পরকীয়া প্রেমিক মোমেন মিলে শিশু পুত্র হৃদয়কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার শরীর কাঁথা-বালিশ দিয়ে মুড়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলার সময় ছোট ছেলে জিহাদ(৭) চিৎকার দেয়। পরে তাকেও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে তারা। নিহত শিশু হৃদয় স্থানীয় বাড়ৈপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র ছিল।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে ওসি এম এ হক জানান। ####