নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকমঃ আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে আবারো হত্যা ও সন্ত্রাস ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিনিয়ত গণ-মাধ্যম সংবাদে এর ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে। গত ৭ ফেব্র“য়ারি বুধবার মাদকসেবী ও মাদক বিক্রেতার মধ্যে দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ আলী রাজু নামে এক মাদক বিক্রেতাকে হত্যা করা হয়। সাংসদ শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমানের জামতলাস্থ হেনা টাওয়ারের টর্চার সেলে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে গণ-মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে নিহত মাদক বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী রাজু প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমানের লোক বলে সংবাদে প্রকাশ। এই ঘটনাটিকে আমরা নারায়ণগঞ্জে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত কর্মকর্তাদের প্রকৃত চিত্র বলে মনে করছি।
আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে ২০১৩ সালের ৬ মার্চ তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। এর কয়েক দিন পর ১৮ মার্চ ত্বকী হত্যার সাথে জড়িত বলে এই অয়ন ওসমান সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশ সুপারের কাছে আমরা অবগতি-পত্র দেই। হত্যাকান্ডের এক বছরের মাথায় ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব তাদের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে খসড়া অভিযোগপত্র প্রদান করে জানায়, আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে তার নেতৃত্বে ১১ জন ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই এ অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হবে। এর পর চার বছর হতে চললো আজো অভিযোগপত্র আদালতে প্রদান করা হয় নাই। এ ঘাতকরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় নাই। প্রশাসনের এ নির্লিপ্ততা ঘাতকদের এমনি হত্যাকান্ডে ও সন্ত্রাসে আরও উৎসাহিত করেছে।
প্রকাশ্যে টর্চার সেল বানিয়ে, তাতে নির্যাতন করে ঘাতকরা হত্যাকান্ড ঘটাতে থাকলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনও প্রয়োজন থাকতে পারে বলে আমরা মনে করি না। প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে রাজপথে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা যেখানে কমিউনিটি পুলিশের বিশেষ কর্মকর্তা হয় সেখানে জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হবার যথেষ্ট কারণ তৈরী হয়।
প্রশাসনের পক্ষপাত দুষ্ট আচরণের কারণেই নারায়ণগঞ্জে হত্যা, সন্ত্রাস ও মাদকের বিস্তার চলছে বলে আমরা মনে করতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা প্রশাসনের এ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, ক্ষোভ প্রকাশ করছি।#