নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সাবেক রাষ্ট্রদুত এবং প্রধান তথ্য কমিশনার মোহম্মদ জমির বলেন, মাতৃভাষায় রক্ষায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিরাট কন্ঠস্বর। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যে দিয়ে এই দেশকে পিছনে নিয়ে যাওয়ার যে ষড়যন্ত্র রচিত হয়েছিলো,তা সফল হয়নি। ১৯৭৪ সালের ৮ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডন পৌছলেন তখন আমার সাথে সাক্ষাত হয়। আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলাম। বঙ্গবন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করলেন এখানেই থাকবি, নাকি দেশে যাবি? তখন লন্ডনে নিযুক্ত কনসল জেনারেল রেজাউল ইসলামকে ডেকে বললেন ওদের দু’জনকে টিকেট কিনে দাও। তখন রেজাউল ইসলাম বললেন, স্যার উনারা তো লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন,বাংলাদেশ সরকারের সাথে তাদের কোন সর্ম্পক নাই। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন আমি বাংলাদেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্দেশ দিলাম, জমিরকে সিভিল সার্জন ফরেন এফেয়ার্সে নিয়োগ দাও। বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, তুই দেশে ফিরে ভারত ডেস্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে থাকবি। তখনও ভারতের রাষ্ট্রদুত নিয়োগ হয়নি। ভারতের হাইকমিশন ছিলো ধানমন্ডিতে। শরনার্থীরা আমার কাছে এসেছিলো তাদের বেদখল হয়ে যাওয়া জমি ও সম্পদ ফিরিয়ে দিতে। আমি বলেছিলাম এটা স্বাধীন দেশ, আইনের আশ্রয় নেন। থানায় যান, জিডি করেন।আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে শরনার্থীরা বঙ্গবন্ধুর কাছে যান, সেখানে বঙ্গবন্ধু সাফ জানিয়ে দেন,জমির যা বলেছে সেটাই সত্য।এটা স্বাধীন দেশ।স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত আমাদের অনেক সহযোগীতা করেছে।এই জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ দেশ থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য ইন্দিরা গান্ধিকে আহবান করেন। তখন পাকিস্তান বলেছিলো বাংলাদেশ ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যে পরিনত হবে। কিসিঞ্জারের কারনে যখন আমেরিকা আমাদের স্বীকৃতি দিচ্ছিলোনা,তখন কনসল জেনারেলকে ডেকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন হয় স্বীকৃতী দেন না হয় গো ব্যাক উইথ ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ। ’৭৪ সালে সৌদি যুবরাজ পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনজীর ভুট্টোকে বলে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাপারে আপনারা আমাদের ভুল বুঝিয়েছেন। বাংলাদেশকে ওআইসিতে দাওয়াত করুন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওভোগ ভুইয়ার-বাগ এলাকার বিদ্যা নিকেতন স্কুল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি মোহম্মদ জমির এইসব কথা বলেন।স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন,বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ডেপুটি এর্টনী জেনারেল অ্যাডঃ মোতাহার হোসেন সাজু,সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সম্পাদক আ্যডঃ এ এম আমিনউদ্দিন আহমেদ,স্কুল ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্য দেলোয়ার হোসেন চুন্নু,মোয়াজ্জেম হোসেন সোহেল এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সাহা।
আলোচনা সভা শেষে আবৃত্তি, হাতের লেখা এবং চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার প্রদান করেন প্রধান অতিথি। এরপর মুক্তিযুদ্ধের উপর চলচিত্র প্রদর্শন করা হয়।#