নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন স্বাচিপ নেতা অমিত রায়। নিজে তিনি রোগীর প্রেসক্রিপশন লিখেন না। লেখে অন্য কেউ। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করলেও ভয়ংকর ক্ষেপে যান তিনি। তার বেপরোয়া আচরনের শিকার হয়েছেন ৩০০ শয্যা হাসপাতালেরই স্বাস্থ সেবা কমিটির সদস্য ও এনটিভির জেলা প্রতিনিধি নাফিজ আশরাফ। প্রশ্ন উঠেছে একজন প্রভাবশালী সাংবাদিকের সাথেই যিনি এমন আচরন করেন সাধারন মানুষের সাথে তিনি কি আচরন করেন।
গতকাল ৩০ জুলাই সকালে নাফিজ আশরাফ নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোতালেব মিয়ার কাছে তার সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ন ও অপেশাদারি আচরনের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে নাফিজ আশরাফ বলেন, গত ২৯ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টা। পায়ে আঘাতজনিত কারণে আমার কন্যাকে নিয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে হাজির হই। এ সময় কর্মরত চিকিৎসকের আসন শূণ্য পাই। পাশের চেয়ারে এক যুবক রোগীর প্রেসক্রিপশন লিখছেন। তার পাশে তাকে ঘিরে তিন চার যুবক দাঁড়িয়ে। তাদেরকে ঐ যুবকের সহকর্মী মনে হলো। আমার মেয়ের পায়ের আঘাতের ক্ষত দেখলেন চেয়ারে বসা যুবক। তিনিই প্রেসক্রিপশন লিখলেন। আমি জানতে চাইলাম ডাক্তার কোথায়? তিনিই তো প্রেসক্রিপশন করবেন। যুবক কোনো উত্তর দিলেন না। ভেতরের কামরায় যেয়ে একজনকে দেখে জানতে পারলাম তিনি চিকিৎসক (কর্তব্যরত)। তিনি বেড়িয়ে আসলেন। আমি সাধারণত ব্যক্তিগত কারণে নিজের পেশার পরিচয় দেই না। তারপরও পরিস্থিতি বাধ্য করল নিজের ভিজিটিং কার্ড ( বসা যুবকের হাতে) দিলাম। এবং চিকিৎসক ডা. অমিত রায়ের কাছে মৌখিকভাবে নিজের পরিচয় দিলাম । তিনি তা আমলে না নিয়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম হাতে তুলে বাইরে গেলেন। মনে হলো খানিক পর অন্য রোগী দেখে ফিরে এসে নিজের আসনে বসলেন। আমার মেয়ের প্রেসক্রিপশনে সাক্ষর করতে করতে তাচ্ছিল্যের স্বরে বললেন,‘কি যেন পরিচয় আপনার?’ তখন আমার পরিচয় দিয়ে এ-ও বললাম, ‘আমি এই হাসপাতালের স্বাস্থ সেবা কমিটির সদস্য।’ কথাগুলো বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলাম। তিনি প্রেসক্রিপশনে সাক্ষর করে আমার হাতে তুলে দিলেন। আমি বললাম, আপনি রোগী দেখে তারপর প্রেসক্রিপশন ঠিক আছে কিনা দেখে দেন। কারণ এটা তো শিক্ষানবিশ লিখেছেন। ডা. অমিত রায় তখন উচ্চ স্বরে বলেন, ‘আপনার কাছে আমার শিখতে হবে? এখানে কোনো শিক্ষানবিশ নেই।’ তারপর তিনি ঝগড়া করার জন্য উদ্যত হলেন। আমি বললাম,‘ নো, নো ঝগড়া। আমি জেনে নেই।’ তারপর আমি যখন পিএস সিদ্দিকুর রহমান সাহেবকে ফোন করি ডা. অমিত তখন ধমক দিয়ে আমাকে বেরিয়ে যেতে বলেন। ফোনে পিএস সিদ্দিকুর রহমান ডা. অমিত রায়ের ব্যাপারে অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন। এতে পরিষ্কার হয়ে যায় রোগীরা কতটা অসহায় এই চিকিৎসকের কাছে। প্রসঙ্গত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা জনসেবা করার জন্য চিকিৎসকদের যে নির্দেশ দিয়েছেন, ডা. অমিত রায় কী তাঁর চেয়ে উর্ধ্বের কেউ?
এ ব্যাপারে কথা বলতে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোতালেব মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।#