নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম: নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে পবিত্র মহাতীর্থে আগামী শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নান উৎসব। এবারও দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক পুণ্যার্থী এই উৎসবে অংশ নেবেন বলে আশা করছে উৎসব কমিটি। এরই মধ্যে সবরকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
শুল্কা তিথি অনুযায়ী শনিবার সকাল ১০ টা ১৪ মিনিট ১০ সেকেন্ডে লগ্ন শুরু হবে। দুই দিন ব্যপী এ স্নান উৎসবের লগ্ন শেষ হবে আগামী রোববার সকাল ৭ টা ৫২ মিনিট ৫০ সেকেন্ড।
আগত পূর্ণার্থীদের নিরাপত্তা জোরদারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন লাঙ্গলবন্দ ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এ বছর প্রায় দশ লাখ পূর্নার্থী ¯œানে অংশ নেবেন বলে আশা করছে ¯œান উৎযাপন কমিটি। প্রায় ১৮ টি ঘাটে পুর্নার্থীরা ¯œান করার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পর্নার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্নান এলাকার প্রবেশ পথে ১০ টি চেকপোষ্ট থাকবে। পয়েন্টে থাকবে সিসি ক্যামেরা, সেচ্ছাসেবক পাশাপাশি ১৫শ ফোর্স থাকবে।
স্নান উৎসব উদ্বোধন করবেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, বিশেষ অথিতি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন, নারায়ণগঞ্জ-৩( সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবুলী।
¯œানের প্রস্ততিতে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিন্টু বেপারীর নেতৃত্বে ব্রহ্মপূত্র নদের কচুরি পানা পরিস্কার, লাঙ্গলবন্দ এলাকায় ১৮টি ঘাটলায় কাপড় পাল্টানো, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবারহ, স্নান ঘাটে বিদ্যুতিক বাতি ও পর্যপ্ত সৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ব্রহ্মপূত্রের জলে পাপমুক্ত করেছিল পরশুরাম মুনিকে। হিন্দু ধর্মলবম্বীদের সেই বিশ^াস থেকে মহা ভারতের বর্ণনা মতে পরশুরান মুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপূত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দ অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে বহ্মপূত্র নদে স্নান খুবই পূণ্যের।
এ স্নান’র ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ^াস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে এ স্নানে অংশ নেওয়ার জন্য উপমহাদেশের এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন লাঙ্গলবন্দে। পাপস্থলনের এ উৎসবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এসে এখানে সমাবেত হয়। পরশুরামের পাপ থেকে মুক্তি হওয়ার কথা স্মরণ করে বহুকাল যাবত লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপূত্র নদে অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) পিন্টু বেপারী জানান, স্নান নির্বিগ্ন করতে জেলা প্রশাসক সব ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে। স্নান ঘাটলাগুলোতে কাপড় পাল্টানোর পর্যপ্ত ব্যবস্থা, বিদ্যুতিক বাতি, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ, পূণ্যার্থীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ১০ শয্যা বিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতালসহ ৫টি মেডিকেল টিম সর্বাক্ষন থাকবে। এছাড়াও পূণ্যার্থীদের উন্নত সেবা প্রদানে ১০ টি এ্যাম্বোলেন্স সার্ভিস চালু থাকবে।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমান জানান, স্নান এলাকার প্রবেশ পথে ১০ টি চেকপোষ্ট থাকবে। পয়েন্টে থাকবে সিসি ক্যামেরা, সেচ্ছাসেবক পাশাপাশি ১৫শ ফোর্স থাকবে। কেউ বিশৃংখলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে কঠোর ভাবে দমন করা হবে। ####