নারীদের বিনামূল্যে ২০ লাখ ‘অপরাজিতা’ সিম দেবে টেলিটক। একজন নারী সর্বোচ্চ দুটি সিম সংগ্রহ করতে পারবেন। রোববার সচিবালয়ে এ সিমের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ হিসেবে টেলিটক নারীদের বিনামূল্যে ২০ লাখ অপরাজিতা সিম বিতরণ করবে।’
‘অপরাজিতা’ সিমে অত্যন্ত সুলভ মূল্যে কল, ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘এর ফলে ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারে জেন্ডার বৈষম্য বহুলাংশে কমবে এবং বাংলাদেশের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা-৫ (জেন্ডার সমতা অর্জন এবং নারী ও মেয়ের ক্ষমতায়ন করা) পূরণে সক্ষম হবে। এ সিম বাংলাদেশের নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে বলে আশা করি।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সিম চালুর সময় বোনাস হিসেবে অপরাজিতা গ্রাহক ১০ টাকা প্রিলোডেড অ্যামাউন্ট (আগে থেকেই রিচার্জ করা) হিসেবে পাবেন। যার মেয়াদ হবে তিন মাস। সেই সাথে এক জিবি ডাটা, ১০ মিনিট অন-নেট (টেলিটক নম্বরে) এবং ৫ মিনিট অফ-নেট (অন্য অপারেটরে) ফ্রি পাবেন সিম চালুর দিন থেকে ৭ দিনের জন্য।
তারানা হালিম বলেন, ‘অপরাজিতা গ্রাহক ৮ টাকায় এক জিবি ও ১৪ টাকায় ২ জিবি ডাটা কিনতে পারবেন। এর মেয়াদ হবে ৭ দিন। এই সুবিধা সিম চালুর পর তিন মাসে যতবার খুশি উপভোগ করা যাবে।’
অপরাজিতা গ্রাহক ২৯ টাকা রিচার্জের মাধ্যমে এক সপ্তাহের জন্য টেলিটক নম্বরে ৩০ পয়সা মিনিট এবং অন্য নম্বরে ৬০ পয়সা মিনিট রেটে কথা বলতে পারবেন।
টেলিটকের বর্তমান নারী গ্রাহকরা অপরাজিতা প্যাকেজে মাইগ্রেট করতে পারবেন। অপরাজিতা সিম টেলিটকের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র ও দেশব্যাপী রিটেইল পয়েন্টে পাওয়া যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের মাধ্যমে নারীদের ‘অপরাজিতা’ সিম অংগ্রহ করতে হবে। বিনিয়োগ ছাড়া টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও সেবা মান উন্নত করা সম্ভব নয় জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘টেলিটকের চলমান প্রকল্পটির মাধ্যমে আগামী জুনের মধ্য জেলা পর্যায় পর্যন্ত নেটওয়ার্ক ভাল পাবেন। আমরা একটা সুনির্দিষ্ট প্ল্যান নিয়ে এগোচ্ছি, আমরা অপেক্ষায় আছি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টির জন্য। দুই দুই বার একনেকে অনুমোদিত ৬১০ কোটি টাকার প্রকল্পটির বিষয়ে সুদৃষ্টি দেন, অর্থ ছাড় করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি দেশপ্রেমের জায়গা থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বারবার অনুরোধ করছি এই প্রকল্পের অর্থ ছাড় দেওয়া হোক। প্রধানমন্ত্রীও দ্রুত অর্থ ছাড়ের নির্দেশনা দিয়েছেন। টেলিটক নিজের পায়ে দাড় করিয়েছে এই কৃতিত্ব আমরা যেন সরকারকে দিতে পারি।’
অর্থ ছাড় না করায় টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে বলেও জানান এক সময়ের দাপুটে অভিনেত্রী তারানা হালিম।
চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল সেবা ফোর-জি ডিসেম্বরে চালু করা যাবে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই, ডিসেম্বরের মধ্যে ফোর জি চালু করার ব্যাপারে সব অপারেটর ঐক্যমতে আছে। আমরাও ঐক্যবদ্ধ, এ জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ এ সময় টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. গোলাম কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন।